২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে পতিত আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে দেশের ছাত্র-জনতা যখন রাস্তায় অবস্থান নিয়েছিল, তখন অভিনেত্রী শিরিন শিলা নেন সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান। আন্দোলন চলাকালীন বিভিন্ন সময় সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া তার পোস্ট এবং বক্তব্যে তিনি আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন (সুখে থাকতে ভূতে কিলায়), যেটি ওই সময় ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়।

ছাত্র-জনতার তুমুল গণআন্দোলনে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর একটি নতুন ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের পথে যাত্রা শুরু করলেও জুলাই-আগস্টের সরকারবিরোধী আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে চাওয়া শিরিন শিলা আজও সরকারি সুবিধা ভোগ করছেন। সম্প্রতি তাকে নিয়ে বাংলাদেশ সরকার মালিকানাধীন বাংলাদেশ টেলিভিশন বা বিটিভির একটি অনুষ্ঠান নির্মিত হয়েছে। যার নাম, “চাওয়া-পাওয়া”। আসন্ন ঈদুল আজহায় অনুষ্ঠানটি ঈদে প্রচার হবে। যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে।

প্রশ্ন উঠেছে, “ছাত্র-জনতার ন্যায্য আন্দোলনের বিরুদ্ধে যিনি অবস্থান নিয়েছিলেন, তিনি কীভাবে আবার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারে জায়গা পান?”। আরও প্রশ্ন উঠছে-”তাকে বিটিভিতে কাজের সুযোগ দিল কে বা কারা?”।

এই প্রতিবেদককে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, শিরিন শিলা হচ্ছেন সেই সুবিধাভোগী সংস্কৃতিকর্মীদের একজন, যারা ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থেকে বছরের পর বছর নিজেদের অবস্থান মজবুত করেছেন। অথচ আন্দোলনের সময় যারা মাঠে ছিলেন, যারা কথা বলেছিলেন সাধারণ মানুষের পক্ষে তাদের অনেকেই এখনও পেশাগতভাবে পিছিয়ে আছেন, অনেকেই রয়েছেন বেকার। অথচ জনগণের করের টাকায় পরিচালিত একটি টেলিভিশন বিতর্কিত ও আন্দোলনবিরোধী অবস্থানের মানুষদের জায়গা দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অনুষ্ঠানটির গ্রন্থণার দায়িত্বে থাকা কবি আসাদ কাজল বলেন, শিরিন শিলা জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল, বিষয়টি আমি জানতাম না। যার কারণে তাকে কাজটিতে নিয়েছি। তার আন্দোলনে বিপক্ষে থাকার তথ্য প্রমাণ থাকলে আমাকে দিন। তথ্য সঠিক হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিটিভির একজন ঊর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের বিপক্ষে যারা কাজ করেছে বিটিভির মতো সরকারি প্লাটফর্মে তাদের কাজের সুযোগ দেওয়া মানে এই আন্দোলনে শহীদদের সঙ্গে বেইমানি করা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের খুব সতর্ক থাকা উচিৎ।

বর্তমান আলো/নীরা